গুপ্ত তীর্থের সন্ধানে

মহালন্দী হাজারপুরের কাত্যায়নী মন্দির পরিক্রমা

বহুকাল আগে কান্দির পাঁচথুপীতে আমাদের বাবা(গুরুদেব) পন্ডিত মশাই এর কাছে সাধন করার সময় বেশ কিছুদিন পাঁচথুপী ও কান্দিতে ছিলেন। সেই সময় বাবা এখানকার অনেক গুপ্ত তীর্থ দর্শন করতে যেতেন। তার মধ্যে এটি ছিল অন্যতম।

বহরমপুর থেকে কান্দি সড়ক পথে ১৩ কিমি গেলেই মহালন্দী কলোনি। সেখানেই পোস্টঅফিস স্টপেজে নেমে ছোট্ট গ্রাম নবগ্রাম-হাজারপুর। বাস রাস্তা থেকে হেঁটে ২/৩ মিনিট গেলেই নিরিবিলি শান্ত গ্রাম হাজারপুরের মা কাত্যায়নীর অতি মনোরম মন্দির।ভারতে যে ৩ টি কাত্যায়নী মন্দির আছে তার মধ্যে এটি অন্যতম। মা এর বিগ্রহের সঠিক বয়স জানা যায়না। তবে মোটামুটি জানা গেল রাজা শশাঙ্ক র সময়কার বিগ্রহ।কাছেই হাটপাড়া। সেখানকার এক পুকুরের মধ্যে, স্বপ্নাদেশ থেকে মা এর এই বিগ্রহ পাওয়া যায়। দুটি বিগ্রহ পাওয়া গিয়েছিল। একটি কাত্যায়নীর ও অন্যটি ব্রহ্মানীর। দুটি বিগ্রহই কালো কষ্টি পাথরের।প্রাচীন মন্দিরটি ছিল পাথর ও ছোট ইঁটের তৈরি। কালক্রমে সেই মন্দির বিনষ্ট হয়ে যায়। তখন গ্রামবাসীদের উদ্যোগ এ বর্তমান মন্দিরটি তৈরি করা হয়। গর্ভ মন্দিরের মধ্যে বাম দিকে মা কাত্যায়নী ও ডান দিকে মা ব্রহ্মানীর বিগ্রহ বিদ্যমান। একদম শান্ত তপোবনের মত পরিবেশ।মা এর সামনে ধ্যানে বসলে ধ্যান জমে যায়। ডান দিকে আছে বহু প্রাচীন এক বটগাছ
তার নীচে রাখা আছে একটি পাথরের ফলক, যা বহু প্রাচীনত্বের প্রমান দেয়। মায়ের প্রতিদিন অন্নভোগ হয় ও আগে থেকে বলে রাখলে প্রসাদ পাওয়া যায়। বাবার সাথে আগে একবার ২০১১ সালে এখানে এসেছিলাম। বাবার কাছে তখন শুনেছিলাম যে, প্রতি বছর কাত্যায়নী ব্রতের সময় ব্রজ গোপিনীরা আজও এখানে সূক্ষে আসেন ব্রত পালনের জন্য। বাবা আরো বলেছিলেন গোটা ভূভারতে আর কোথাও একত্রে কাত্যায়নী ও ব্রহ্মাণীর যুগল বিগ্রহ নেই।গতকাল (সোমবার) মহাজাগ্রত এই পীঠ দর্শন করে ও প্রসাদ পেয়ে মহানন্দ লাভ হল।।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *